[ঢাকা, ০৮ অক্টোবর, ২০২৩] ইউনিসেফ বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন ও টেলিনরের মধ্যকার এক নতুন অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তির নৈতিক ও দায়িত্বশীল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাবে বাংলাদেশের ১ কোটিরও বেশি শিশু।
এই অংশীদারিত্বের আওতায়, "ডিজিটাল সাক্ষরতা শক্তিশালীকরণ এবং বাংলাদেশে শিশুদের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির নিরাপদ, নৈতিক ও দায়িত্বশীল ব্যবহার" শীর্ষক একটি উদ্যোগ চালু করা হবে। উদ্যোগটির প্রাথমিক উদ্দেশ্য বাংলাদেশের শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ডিজিটাল সাক্ষরতার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা গড়ে তোলা ও ডিজিটাল পরিসরের ক্রমবর্ধমান সমস্যা এবং সম্ভাবনাগুলো বিবেচনা সাপেক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির নিরাপদ, নৈতিক এবং দায়িত্বশীল ব্যবহারে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
এ নিয়ে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু যেনো নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে ওঠে এবং সহিংসতা, অপব্যবহার, অবহেলা ও শোষণ থেকে সুরক্ষিত থাকে, তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ইউনিসেফ।” ইন্টারনেট শিশুদের শিক্ষা এবং বিকাশের ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ প্রদান করে। একইসাথে, অনলাইনে যেকোনো ক্ষতিকর কনটেন্ট এবং হুমকি থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে তাদের ডিজিটাল সাক্ষরতা ও অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”
৮ম এবং ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ৪২ লাখ শিক্ষার্থীসহ দেশের ১ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী এই উদ্যোগের মাধ্যমে উপকৃত হবে। এদের মধ্যে বিশেষ-চাহিদা সম্পন্ন শিশুসহ ঝুঁকিতে থাকা ১০ লাখ শিশুকে প্রকল্পটির ডিজিটাল শিক্ষার যাত্রায় অগ্রাধিকার দেয়া হবে। পাশাপাশি, ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত আরো ৬০ লাখ শিক্ষার্থী বয়সভেদে অনলাইন নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার ওপর একাধিক সেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
এছাড়াও অনলাইন সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনাসহ প্রাসঙ্গিক নানা তথ্য সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এ প্রকল্পে যুক্ত করা হবে ২৫ হাজার শিক্ষক এবং ২০ লাখ অভিভাবককে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, “অনলাইন নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল সাক্ষরতাকে আমাoদের শিক্ষার সাথে সম্পৃক্তিকরণ নিশ্চিত করা আমাদের শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য একটি অঙ্গীকার। কিভাবে নিরাপদে এবং দায়িত্বশীলভাবে ডিজিটাল জগতে বিচরণ করতে হয়, তা শেখানোর মাধ্যমে আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তোলার পাশাপাশি প্রযুক্তির পূর্ণ সম্ভাবনা ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখি। এক্ষেত্রে, একইসাথে আমরা তাদের সুরক্ষা ও সুস্থতা নিশ্চিতেও কাজ করি।” তিনি আরও বলেন,
“এমন একটি বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করার জন্য ইউনিসেফের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে। আর এই মহৎ কাজে অবদান রাখতে এগিয়ে আসার এখনই সময়।”
টেলিনর এশিয়ার হেড অব সাসটেইনিবিলিটি ইয়োহ্যান মার্টিন সিল্যান্ড বলেন, “কানেক্টিভিটির সুযোগ ও সম্ভাবনা উন্মোচনে ডিজিটাল দক্ষতা ও অনলাইন সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই উদ্যোগটিকে পরিসর, ব্যাপ্তি এবং প্রভাবের দিক থেকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে টেলিনর এশিয়া, গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফর একসাথে কাজ করা এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করবে। প্রযুক্তি বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এবং বর্তমানের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভবিষ্যতের ডিজিটাল বিশ্বে নিজেদের সুরক্ষায় সবারই ডিজিটাল দক্ষতা তৈরি ও বিকাশের সুযোগ প্রয়োজন।”
নিরাপদ ইন্টারনেট অনুশীলন নিয়ে শিশু, মা-বাবা ও কেয়ারগিভারদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কিশোর-কিশোরীদের অনলাইন ঝুঁকি কমাতে এবং তাদের নিজেদের কমিউনিটিতে ডিজিটাল ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে সম্পৃক্ত করতে ২০১৯ সাল থেকে টেলিনর গ্লোবাল পার্টনারশিপের অধীনে ইউনিসেফ বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন ও টেলিনর একসাথে কাজ করছে। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশে ২ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মা-বাবা ও অভিভাবকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
উদ্ভাবনী এ অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের তরুণ, বিশেষ করে ডিজিটাল ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা গ্রামীণফোন ও টেলিনরের প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। অন্যদিকে, তরুণদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তাদের বিকাশে ভূমিকা রেখে আরও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে নিজেদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফ:
বিশ্বের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কাছে পৌঁছাতে বিশ্বের দুর্গম সব অঞ্চলে কাজ করে ইউনিসেফ। ১৯০টি দেশ ও অঞ্চলে আমরা সব জায়গায় সকল শিশুর জন্য উন্নত বিশ্ব তৈরিতে কাজ করছি। ইউনিসেফ এবং ইউনিসেফ শিশুদের জন্য কী ধরনের কাজ করছে, তা সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন: www.unicef.org/bangladesh/
ইউনিসেফ বাংলাদেশের টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউব চ্যানেল হচ্ছে যথাক্রমে টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউব।