ইন্টারনেটের দুনিয়ায় জানতে হবে, কোথায় আপনার থামতে হবে।
ইন্টারনেটের দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত যেমন বাড়ছে সম্ভাবনা তেমনি এর ভুল ব্যবহারে তৈরি হচ্ছে নানান ধরনের অনিরাপত্তা। কিন্তু একটু সতর্ক হলেই নিরাপদ থাকা সম্ভব! তাই ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে ও বুঝতে হবে কোথায় আমাদের থামতে হবে।
ফেক প্রোফাইল সতর্কতা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের সময় একটু সতর্ক হলেই অনলাইন এক্সপেরিয়েন্স আরও নিরাপদ করে তোলা সম্ভব! সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা নিশ্চয়ই কোনো না কোনো পরিচয়ে পরিচিত। যাকে প্রোফাইল বলে থাকি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যখন কেউ নিজের পরিচয় গোপন করে ভিন্ন নাম বা ছবির আড়ালে। এসব ফেক প্রোফাইল হতে পারে আপনার জন্য ক্ষতির কারণ। ফলে এ সম্পর্কে আমাদের যেমন জানতে হবে তেমনি নিরাপদও থাকতে হবে। কিন্তু ফেক প্রোফাইল চিনবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে প্রথমেই প্রোফাইলের ছবি চেক করুন। ছবিটি সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন অন্য কোথাও পাওয়া যায় কি না। তাছাড়া চেক করে দেখতে হবে-
- ইউজার নেম ও আইডি নেম একই কি না।
- এমন প্রোফাইলের ফ্রেন্ডলিস্টেও অন্য সন্দেহজনক আইডি যুক্ত আছে কি না।
- অ্যাবাউট সেকশন থেকে বেসিক ইনফো চেক করে নিন।
- সেলিব্রেটি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আসল আইডি চেনার সহজ উপায় ভেরিফাইড মার্ক চেক করা।
ফেক আইডি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে গেলে তাকে আনফলো বা আনফ্রেন্ড করে দিতে পারেন। ফেক আইডিটি বন্ধ করার জন্য সেই প্রোফাইলে গিয়ে রিপোর্টও করতে পারেন। আর যদি এসব আইডি থেকে কোনো রকম হয়রানির শিকার হন তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অভিযোগও জানাতে পারেন।
গুজব এড়িয়ে চলা
জেনে বা না জেনে অনালাইনে আপনার ছোট্ট একটি শেয়ার হতে পারে অনেক বড় ক্ষতির কারণ। ইন্টারনেট ব্যবহারে একটু দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমেই গুজব প্রতিরোধ করা সম্ভব! কিন্তু প্রতিদিন এতসব ইনফরমেশনের ভিড়ে কোনটি সঠিক কোনটি ভুল বুঝবেন কীভাবে? এজন্য প্রথমেই তথ্যটির সোর্স খেয়াল করতে হবে। যে সোর্স থেকে তথ্যটি এসেছে তা বিশ্বাসযোগ্য কি না যাচাই করে দেখুন। এছাড়াও খেয়াল করে দেখতে হবে-
- সংবাদটি অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সাইটে প্রকাশিত হয়েছে কি না।
- ওয়েব অ্যাড্রেসটি অদ্ভুত লাগছে কি না।
- ·যে প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা খবরটি দিয়েছেন তার নাম কোথাও শুনেছেন কি না।
এই বিষয়গুলো যাচাই করার পর যদি মনে হয় ইনফরমেশনটি ভুল তবে অবশ্যই শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি কোনো পেজ থেকে তথ্যটি আপনার সামনে আসে তবে রিপোর্ট করে দিতে পারেন আর ই-মেইলের ক্ষেত্রে রিপোর্ট করুন স্প্যাম মেইল হিসাবে।
অনলাইন হ্যারাজমেন্ট প্রতিরোধ
কথায় আঘাত লাগে! অনলাইনে অন্যের ব্যবহার করা ছোট্ট একটি শব্দ কিংবা ইমোজির এক্সপ্রেশন হয়ে উঠতে পারে অস্বস্তির কারণ। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারে একটু সচেতন হলেই এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা সম্ভব। আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে নিশ্চয়ই এমন কেউ আছেন যাকে আপনি চেনেন না। এমন সব অচেনা মানুষ কখনও আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই অপরিচিত কারো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট Accept করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শুধু তাই নয় বরং-
- সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত ইনফো Public করে রাখবেন না।
- সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- অপরিচিত মেইল বা মেসেজ এড়িয়ে চলতে হবে।
- অন্য কারো পোস্টে আপনাকে Tag করার অপশন বন্ধ করে রাখতে পারেন।
ইন্টারনেটের দুনিয়ায় সম্ভাবনা যেমন সীমাহীন তেমনি এর ভুল ব্যবহারে হতে পারে ক্ষতি। সচেতন হলেই নিরাপদ থাকা সম্ভব!
ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা
রিয়েল লাইফে আপনার একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য কি সবার সাথে শেয়ার করেন? তাহলে অনলাইনে কেনো? ইন্টারনেটের দুনিয়ায় শেয়ার করা আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন অনেক ক্ষেত্রে আপনার জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তবে সতর্ক থাকাও চাইলেই সম্ভব! অনলাইনে নিজের পুরো নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল আইডি কিংবা পাসওয়ার্ড শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া নিরাপদ থাকতে-
- শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
- লোকেশন সেটিং বন্ধ রাখার মাধ্যমে নিজের অবস্থান না জানানোই ভালো।
- আপনার পোস্ট কারা দেখতে পারবে তা ঠিক করে দিতে পারেন।
- টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখতে হবে।
- ই-মেইল আইডি বা ফোন নম্বর দিয়ে কেউ খোঁজার চেষ্টা করলে পাবে কি না তা ঠিক করে দিতে হবে।
প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উপায়ে আপনার শেয়ার করা ব্যক্তিগত তথ্যের ভুল ব্যবহার হতে পারে। তাই অনলাইন সেফটি সম্পর্কে জানতে হবে এবং ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।